পাহাড়ের গা বেয়ে জলপ্রপাতের হাজার ফুট ওপর থেকে পাথরের ওপর পড়ার আওয়াজের দিকে হাটতে হাটতে বিশালাকার দেবদারূ, পাইন এবং হেমলক গাছের মধ্যে দিয়ে পথ হারিয়ে ফেললে অন্ধকারে কি হবে তা না ভেবে ঝলমলে দিনের আলোতে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হাটতে থাকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই চারপাশের পাহাড়ের মাঝে জলপ্রপাতের নান্দনিক দৃশ্য কাটিয়ে দিলো মধ্যাহ্নভোজের চমৎকার রেশ । মোবাইল ক্যামেরার প্রতি সুবিচার করার পর ফেরার পথে মানুষের ভিড় কাটিয়ে চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে বেশ কয়েকবার হরিণের বিভিন্ন প্রজাতির মুখোমুখি হওয়াতে হকচকিয়ে তাদের নিমেষে গাছের আড়ালে পালানো যেন প্রকৃতির এক অলীক সুর বিঘ্ন হওয়ার অনুভূতি দিচ্ছিল । আমাদের অরণ্যবিনাশের প্রভাব থেকে এরম কিছু জায়গাকে এখনো যেভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে তা দেখে দারুন লাগলো।
ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত উপাদেয় এবং সুস্বাদু মেক্সিকান সান্ধ্যভোজনের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম সূর্যাস্তের আগেই । পাহাড়ি রাস্তার গা ধরে আঁকেবাঁকে বহুক্ষণ চলার পথ যে রাতের দিকে কিরকম মেঘে ঢেকে কুয়াশাচ্ছন্ন অথবা শিলাবৃষ্টির সম্মুখীন হতে পারে তা সাউথ ডাকোটার এবং কলোরাডোর স্মৃতিবিজড়িত অভিজ্ঞতার পর ভোলা অসম্ভব । আজ আর সেরকম হলো না, জানলার কাঁচ কতটা তুলবো আর কতটা নামাবো আর ঠিক কতটা হাওয়া খাওয়ার পর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে সেই ক্যালকুলেশন করতে করতে পৌঁছে গেলাম টলেডোস বিশুদ্ধ মেক্সিকান রেস্তোরাঁতে । রকমারি আস্বাদনের চক্করে প্রতিবারের মতন অর্ডারের পরিমানে মন না রেখে, লাইভ মিউজিক এবং খাঁটি মেক্সিকান পরিবেশে ক্রমাগত কানে ভেসে আশা বহু শব্দের অজানা ধ্বনির আলোআঁধারিতেই হারিয়ে গেলাম । সভ্যতার অস্তিত্বের সুর, সময়ের সাংস্কৃতিক প্রাচীর, ঝলমলে বাতির উত্তেজনা, সুস্বাদু নৈশভোজের গভীর অনুভূতির সাথে মিশে যেতে থাকলো |

excellent !!!